পরকালের পথে যাত্রাঃ বিচারদিবসের ছোট আলামত(১) পর্ব-০৪

আসসালামু আলাইকুম

ইমাম আনওয়ার আওলাকির The Hereafter এর অনুকরণে নির্মিত “পরকালের পথে যাত্রা” অডিও লেকচারের এই পর্বে শুরু হচ্ছে একটি নতুন সাবসেকশন “মহাপ্রলয়ের লক্ষণ”। এই পর্বে আলোচিত হবে আল-ক্বিয়ামাহ এর ছোট বা গৌণ লক্ষণগুলো নিয়ে। আল ক্বিয়ামাহ আসলে ঠিক কখন ? ছোট আলামতগুলো দেখে কি আমরা জানতে পারব ক্বিয়ামাহ কত কাছে ? এখন পর্যন্ত কিসের আলামত পাওয়া গেছে ? এসব বিষয়ের সাথে এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে ৭টি আলামত নিয়েআর হ্যাঁ, আখিরাতের আলোচনা কেবল “কি ঘটতে যাচ্ছে” সে আলোচনাতেই সীমাবদ্ধ না, তাই এ পর্বের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হচ্ছে, এখানে উঠে এসেছে মুসলিম উম্মাহর জীবনে ইতোপূর্বে ঘটে যাওয়া কিছু ঐতিহাসিক ঘটনা, অত্যন্ত সাবলীল এবং আকর্ষণীয় ভঙ্গিমায়।

সবাইকে শোনার আমন্ত্রণ !


লেকচার ডাউনলোড লিংকঃ লেকচার ডাউনলোড লিংকঃ
http://archive.org/download/TheHereafter/04BnThe.hereafterMinorSignsOfTheDay01-07.mp3

আগের পর্বগুলো পেতে হলেঃ http://archive.org/details/TheHereafter
read more

পরকালের পথে যাত্রাঃকবরের যাত্রা পর্ব-০৩


এই যে আপনি, হাসছেন-ঘুরছেন-ফিরছেন-মোজমাস্তি করছেন, ভেবে দেখেছেন কি কখনও, জীবনটা কি আপনার কেবল এসবের মাঝেই ? কখনই না, আপনার চারপাশের সবকিছু রেখে আপনাকে যেতে হবে সাড়ে তিন হাত প্রশস্ত একটি ছোট্ট কামড়ায়, সেখানে উত্তর দিতে হবে ৩ টি প্রশ্নের। না, দেখাদেখি করার কোন সুযোগ সেখানে নেই ! 


ইমাম আওলাকির The Hereafter এর অনুকরণে নির্মিত “পরকালের পথে মহাযাত্রা” ধারাবাহিক লেকচার সিরিজের এই পর্বে আলোচনা করা হয়েছে “কবরের জীবন” সম্পর্কে। যে কবরের কথা মনে পড়লে সাহাবীদের চাপা কান্নায় মসজিদে গুঞ্জন শোনা হত, আর সেই একই কবরস্থানের সামনে দাঁড়িয়ে আমরা হাসি ঠাট্টা করি। এই গুরুত্বপূর্ণ পর্বটিতে তাই আপনারা ইনশা আল্লাহ খুব বিশদভাবে জানতে পারবেন মৃত্যুর পরে আপনার কি অপেক্ষা করছে। যারা আমরা পরকালে সাফল্যের আশা করি, তাদের জন্য এটা জানা খুব জরুরি যে কোন ৮টি কাজের জন্য আমরা কবরে শাস্তি পেতে পারি। আর হ্যাঁ, সবশেষে আছে, কি আমাদেরকে কবরের কঠিন পরীক্ষার হাত থেকে রেহাই দিতে পারে। সবাইকে লেকচারটি শোনার জন্য আমন্ত্রণ !

লেকচারটি ডাউনলোড করতে ক্লিক করুনঃ (30MB)
http://archive.org/download/TheHereafter/03BnTheHereafterJourneyOfTheSoulInGrave.mp3
read more

পরকালের পথে যাত্রাঃমৃত্যু(১) পর্ব-০১



সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য

"পরকালের পথে যাত্রা" একটি বাংলা অডিও লেকচার সিরিজ, যেটা তৈরি করা হয়েছে ইমাম আনওয়ার আল আওলাকির বিখ্যাত লেকচার সিরিজ "THE HEREAFTER" এর আদলে। এই চমৎকার লেকচার সিরিজটিতে একজন মানুষ মৃত্যুর পর থেকে শুরু করে যে সব পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যাত্রা করে তা অত্যন্ত সাবলীল এবং প্রাঞ্জল ভাষায় বর্ণণা করা হয়েছে। এ লেকচারটি আমাদের সামনে আখিরাতের চিত্র অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর ভঙ্গিতে তুলে ধরতে সক্ষম হবে আশা করা যায়। পরকালের এই অনিবার্য যাত্রায় আমরা যারা প্রস্তুতি নিতে চাই তাদের সকলকে এই ধারাবাহিক লেকচার সিরিজটি শোনার আমন্ত্রণ জানান হল।

১ম পর্বের ডাউনলোড লিংকঃ
http://archive.org/download/TheHereafter/01BnTheHereafterDeath.mp3
read more

পরকালের পথে যাত্রাঃমৃত্যু(২) পর্ব-০২


সকল প্রশংসা আল্লাহর জন্য


এই অডিওটি "পরকালের পথে যাত্রা" লেকচার সিরিজের ২য় পর্ব। আগের পর্বের মৃত্যু বিষয়ক আলোচনার ধারাবাহিক ২য় পর্ব। এই পর্বে আছে সাক্বারাতুল মাউত বা মৃত্যু যন্ত্রণার কথা। একজন মানুষের জীবনের শেষ সময়টা কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তার সাথে এই পর্বটি আমাদের শোনাবে বারসিসার গল্প, যার মাধ্যমে আমরা জানব, কিভাবে দ্বীনের সামান্য বিচ্যুতির মাধ্যমে একজন মানুষের কতটা করুণ পরিণতি হতে পারে। এবং সবশেষে কিছু নাসীহা, কিভাবে আমরা দ্বীনের উপর অটল থেকে মৃত্যুবরণ করতে পারি।


অডিওটি শুনতে ক্লিক করুনঃ (26MB)

অন্যান্য পর্বগুলোর লিংক পেতে ক্লিক করুনঃ

read more

“জগতের শ্রেষ্ঠ পাদুকা”


জর্জ ডব্লিউ বুশ আশা করেছিল যে,বাগদাদে আমেরিকানদের গোলাপ ফুল দিয়ে স্বাগত জানানো হবে অথচ সাত বছর পর সেই বুশকেই এক জোড়া জুতো ছুঁড়ে স্বাগত জানানো হল!!

 
গতকাল বাগদাদে ইরাকের প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে বুশ যখন বক্তৃতা দিচ্ছিল ঠিক তখন একজন ইরাকি সাংবাদিক বুশকে লক্ষ্য করে একটি জুতো ছুঁড়ে মারেনদুর্ভাগ্যবশত জুতোটি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। কিন্তু ঐ সাংবাদিক তৎক্ষণাৎ দ্বিতীয় জুতোটিও ছুঁড়ে মারেন এবং সেটিও লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়। প্রেসিডেন্ট বুশ অবশ্য সেই ৯/১১ থেকেই লক্ষ্যভেদে তার ব্যর্থতার নৈপুণ্য প্রদর্শন করে আসছে। জুতো ছুঁড়ে মারার সময়ে বুশকে উদ্দেশ্য করে ঐ সাংবাদিক বলেন,“নে কুত্তা,এটা তোর জন্য বিদায়ী চুম্বন। আর এই চুম্বন ইরাকের বিধবা, অনাথ এবং সেখানে যাদের হত্যা করা হয়েছে তাদের পক্ষ থেকে।”
আরব বিশ্বে কাউকে জুতো নিক্ষেপ করা কিংবা কুত্তা উপাধিতে ভূষিত করা, দুটোই চরম অপমানজনক। অবশ্য মুসলিম ভূমিতে আগ্রাসনকারীর জন্য এটাই যথাযথ অভ্যর্থনা। 

এই সাংবাদিকের জুতো আরবের সেই সব শাসকদের জুতোর তুলনায় অনেক উত্তম যারা তাদের মেয়েদেরকে বুশের মনোরঞ্জন করার জন্য লেলিয়ে দেয়।  


এটা লজ্জার ব্যাপার যে, গ্রিন জোন স্কলার এবং র‍্যান্ড মুসলিমদের আগেই একদল আত্মমর্যাদাহীন একদল ফক্বীহ, প্রেসিডেন্ট বুশের সম্মান রক্ষার্থে ছুটে এসেছে এবং দাবি করেছে বুশের সাথে এমন করাটা নাকি “সুন্নাহর খেলাফ” !  সবার এটা জেনে নেয়া বাঞ্চনীয় যে, যেসব কাফিরের শিষ্টাচারবোধ আছে এবং যারা ইসলামিক রাষ্ট্রের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন করে, মুসলিমরা তাদের প্রতি সদয়, কিন্তু সীমালঙ্ঘনকারী ও অহংকারীদের প্রতি তারা কঠোররাসুল(সাঃ) কুরাইশ নেতাদের উদ্দেশ্যে বলেছিলেন, “আমি এসেছি যুদ্ধ করতে”। আবু বকর (রঃ) কে আমরা দেখি তিনি হুদাইবিয়ার কাফিরদের অভিশাপ দিয়েছিলেন, উমরও (রঃ) এই অবিশ্বাসীদের সব সময় সঠিক ভাবে দমন করতেন, তাদের বিরুদ্ধে দু’আ করতেন এবং তাদেরকে ভীতি প্রদর্শন করতেনএই কথাগুলো তাদের কাছে অদ্ভুত মনে হবে যারা আল-মালিকি কে “উলিল-আমর” মনে করে এবং দাবি করে যে, মুসলিম হিসেবে মালিকির বিরোধিতা করা উচিত নয়। তবে কি এই সাংবাদিক মালিকির অনুমতি ছাড়া জুতো নিক্ষেপ করে অপরাধ করেছে? এই কাজটি তাদের কাছে “ফিতনা” !

দুর্ভাগ্যবশত আমাদের ভাইটি তার লক্ষ্য ভেদে ব্যর্থ হয়েছেন। এই ব্যাপারে একজন যথার্থই বলেছেন, “বুশকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপ করা জুতো লক্ষ্যভ্রষ্ট হবে- এটা দেখতে কেউই আগ্রহীনয় নয় জীবনে এই ধরণের সুবর্ণ সুযোগ খুব কমই মেলে।” 

মুসলিম জাতির অন্যতম শ্রেষ্ঠ এই সন্তানের জুতোর ব্র্যান্ড যদি কেউ জানতে পারেন তাহলে আমাদেরকে অবশ্যই জানাবেন। আমাদের ভাইয়ের সমর্থনে আমরা সবাই এই একই জুতো কিনব ইনশাআল্লাহ্‌।
read more

মুসা আলাহিসসালামের জীবন থেকে তারবিয়াহ

ইন্নালহামদুলিল্লাআহ নাহ্ মাদুহু ওয়ানাস্তাইনুহু ওয়ানাস্তাগফিরু ওয়ানাস্তাহদি ওয়ানাওউযুবিল্লাহি মীন শুরুরি আন ফুসিনা ওয়ামিন সাইয়্যিয়াতি আমালিনা মাইইয়াহদিইহিল্লাহু  ফালা মুদিল্লালা ওয়ামাইউদলিল ফালা হাদিয়ালা ওয়াআশহাদু আল্লা ইলাহা ইল্লালাহ ওয়াহদাহু লা শারিকালা ওয়া আশহাদু আন্না মুহাম্মাদান আব্দুহু ওয়া রাসুলুহ আদ্দাল আমানা ওয়া নাসাহাল উম্মাহ ওয়াজাহাদাহ ফিল্লাহি হাককা জিহাদি ইমামুল মিজাহিদিনা ওয়া খাতামুল আম্বিয়াই ওয়াল মুরসালিনা সালাওাতুল্লাহিওাসালামুয়ালাহি আম্মা বাদ।

মূসা আলাইহিওয়াসসালামের কাহিনী কুরআনে সবচেয়ে বেশি বার অবতারণা করা হয়েছে, এবং মূসার কাহিনী এত বড় আর মাহাত্ম্যপূর্ণ যে একজন মনীষী বলেন-কুরআন তো প্রায় মূসার কাহিনী হয়ে যাচ্ছিল।এবং মূসার কথা এত বেশি বার উল্লেখ করার পিছনে বেশ কিছু কারন রয়েছে। সময়ের সীমাবদ্ধতার জন্য আমি কয়েকটি তুলে ধরছি, কেননা আমরা চেষ্টা করব মূসার কিছু ঘটনা থেকে শিক্ষা নেবার জন্য ইন শা আল্লাহ্  

প্রথম কারণ, মূসা আলাহিসসালাম হলেন জন শ্রেষ্ঠ নবীদের একজন।

দ্বিতীয় কারণ, বনী ইসরাহিল ছিল উম্মাতে মুহাম্মাদির আগে শেষ মুসলিম উম্মাহ।

তৃতীয় কারণ, বনী ইসরাইল হল উম্মতে মুহাম্মাদির পর দ্বিতীয় বৃহত্তম উম্মাহ।

চতুর্থ কারণ, মূসা আলাহিসসালাম এবং ফিরাউনের কাহিনী। যার মাধ্যমে আমরা শিক্ষা নিতে পারি কেননা উম্মাতে মুহাম্মাদির ইতিহাসে অনেক ফিরাউনের মুখোমুখি  হতে হবে।

পঞ্চমত , মূসা আলাহিসসালাম এবং বনী ইসরাইলের কাহিনী। আল্লাহ্ আমাদের বনী ইসরাইলের কাহিনী বর্ণনা করছেন কারণ তারা আমাদের মত মুসলিম ছিল এবং তাদের ভুলগুলো থেকে যেন আমরা শিখতে পারি আর শুধরাই। রাসুলুল্লাআহ বলেছিলেনআমার উম্মাহ থেকে কিছু মানুষ থাকবে যারা বনী ইসরাইল আগের উম্মাহর ভুলগুলো করবে।


আমরা মূসা আলায়হি ওয়াসাল্লামের মায়ের কাহিনী থেকে শুরু করি ইন শা আল্লাহ্ এটা বলা হয়ে থাকে যে ফিরআউন একরাতে স্বপ্নে দেখে পবিত্র ভূমি জেরুসালেম থেকে আগুন এসে সব মিশরীয়দের বাড়ীগুলো পুড়িয়ে ফেলছে কিন্তু আশ্চর্যজনকভাবে বনী ইসরাইলদের বাড়ীগুলো অক্ষত থাকছে।

সাভাবিকভাবেই ফিরআউন এর ভাবার্থ জানতে চাইলে তাকে বলা হল, এর অর্থ এই যে বনী ইসরাইল থেকে একটা শিশু জন্ম নিবে যে কিনা ফিরআউনের মৃত্যুর কারণ হবে। কঠোর মনের ফিরআউনের জন্য এটা খুবই সাধারন ব্যাপার ছিল অতঃপর সে তার লোকদের নির্দেশ দেয় যে বনী ইসরাইল থেকে এবছর যত পুত্র সন্তান হবে সবাইকে হত্যা করো। এবং, সে একটা আইন চালু করল যেখানে সব অন্তঃসত্ত্বা বনী ইসরাইল মহিলাদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখা হবে সন্তান প্রসবের আগ পর্যন্ত। আর ঠিক যেই সময় সন্তান ভূমিষ্ট হবে তখনই ফিরআউনের সৈন্যরা এসে সন্তানটিকে হত্যা করবে যদি সেটি পুত্রসন্তান হয় আর কন্যাসন্তান হলে জীবিত রাখবে।

মূসা আলায়হিওসাল্লামের মা সেই বছরেই অন্তঃসত্ত্বা হলেন। কিন্তু সুবহানাল্লাহ, আল্লাহ্ আযযা ওয়াজাল যখন তাঁর বান্দাকে রক্ষা করতে চান তখন ত্রিভুবনের কোন ধরণের শক্তি নেই যে তার কোন ক্ষতি করতে পারে। সুতরাং, আল্লাহ্ তাঁর মহান অদৃশ্য জ্ঞানের অংশ হিসেবে মূসার মার অন্তঃসত্ত্বা হবার ব্যাপারটি গোপন করে রাখলেন। কিন্তু সমস্যা হল মূসা আলায়হি ওয়াসসালামের জন্মের পর তাঁকে লুখিয়ে রাখাটা তাঁর মার জন্য অনেক কঠিন হয়ে পড়ছিল। এমতাঅবস্থায় আল্লাহ্ সুব হানাহু ওয়তালা কুরআনের আয়াহ নাযিল করলেন, আমরা মূসার মাকে নির্দেশ দেই তাঁকে দুধপান করাতে এবং যখনই তুমি তাঁর নিরাপত্তা নিয়ে ভীত হও তাঁকে নদীতে ফেলে দাও। এখন, তোমাদের কেউ যদি নীল নদ দেখে থাক জান এর স্রোত কতো শক্তিশালী এবং ওখানে সাতার কাটাটা কতোটা বিপদজনক যদিওবা সে একজন দক্ষ সাঁতারু হয়। তাহলে আল্লাহ্ কিভাবে একজন মাকে তাঁর সন্তানকে নীল নদে ছুড়ে ফেলতে বললেন? আল্লাহ্ বলছেন, তুমি যদি ফিরআউন বাহিনীকে ভয় করো তাহলে মূসাকে ছুড়ে ফেল পানিতে। মূসার মা একধরনের উভয়সঙ্কটে পড়ে যেতে পারতেন কিন্তু তিনি পড়েননি। কেন? আল্লাহ্ তাঁকে কথা দেন যে, কোন ধরণের ভয় বা দুঃখ করো না, মূসা তোমার কাছে ফিরে আসবে এবং সে আল্লাহ্ একজন রাসুল হবে। এখন, যদি আল্লাহ্ উপর ইয়াক্বীন না থাকতো তাহলে তিনি মূসাকে কোনভাবেই ছাড়তেন না, কিন্তু আল্লাহ্ প্রতি শক্ত ইমানের জন্য তাঁর চোখের মনিকে তিনি নীল নদের মতো ভয়ংকর জায়গায় ফেলে দিয়েছিলেন।

অতএব, প্রথম শিক্ষা পাই আমরা এখান থেকে এই যে আল্লাহ্ উপর ইয়াকিন রাখতে হবে যে কোন অবস্থায়। আর এটা যদি আমরা করতে পারি তাহলে আমরা হাতে-হাতে আল্লাহ্ শপথের উপর ইয়াক্বীন রাখার ফল দেখতে পাব ইন শা আল্লাহ্

তারপর, মূসার মা তাঁকে একটা কাঠের বাক্সে করে নীল নদে ফেলে দিলেন এবং মূসার বোনকে বললেন নদের তীর পর্যন্ত ওটাকে অনুসরণ করতে। এবং সুবহানাল্লাহ সব জায়গা ছেড়ে বাক্সটি গিয়ে থামল ঠিক ফিরাউনের প্রাসাদের সামনে। এটা একধরণের ‘irony’  বলা যায়, যে মূসাকে পানিতে ফেলা হয়েছিল ফিরাউনের জুলুম থেকে বাচার জন্য আর বাক্সটি ঠিক ফিরাউনের প্রাসাদেই এসে ভিড়ল। মূসার মা যখন এটি জানতে পারলেন তিনি প্রায় ফিরাউনের প্রাসাদের দিকে যাবার জন্য মন স্থির করে ফেলছিলেন সন্তানকে ফেরত চাবার জন্য। কিন্তু তিনি যদি যেতেন তাহলে কি হত? তারা বুঝে ফেলত যে শিশুটি বনী ইসরাইলের এবং সঙ্গে সঙ্গে তাঁকে হত্যা করত। কিন্তু, আল্লাহ্ বলেন মূসার মা যখন মানসিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়ে আমরা তাঁর আত্মাকে দৃঢ় করে দিয়েছিলাম যেন সে বিশ্বাসীদের মধ্যে একজন হয়। এটাই হল আল্লাহ্ ওয়াদার উপর ইয়াকিন রাখার ফল।

আল্লাহ্ শক্ত করলেন মূসার মাকে যখন তিনি দুর্বল হয়ে পড়েন। এটাই হল আমাদের দ্বিতীয় শিক্ষা। তুমি যদি আল্লাহ্ দিকে এক পা আগাও আল্লাহ্ তোমার দিকে অনেক পা এগিয়ে আসবেন। তৃতীয় শিক্ষা, ওয়ামা ইয়ালামু জুনুদা রব্বিকা ইল্লাহু। আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানেনা আল্লাহ্ সৈন্য কারা। বাতাস আল্লাহ্ সৈন্য হতে পারে, পানি আল্লাহ্ সৈন্য হতে পারে, ফিরাউনকে পানি ধ্বংস করেছিল। পশুপাখিও আল্লাহ্ সৈন্য হতে পারে। প্রকৃতপক্ষে, যেকোনো কিছুই আল্লাহ্ সৈন্য হতে পারে; আল্লাহ্ ছাড়া কেউ জানেনা। যাই হোক, মূসা আলায়হি ওয়াসাল্লামকে ফিরআউনের সৈন্যরা তুলে নিয়ে যায় এবং যদিও ফিরাউনের প্রাসাদ ছিল দুনিয়ার শয়তানির কেন্দ্র আল্লাহ্ সেখানেও তাঁর একজন সেনাকে রেখে দিয়েছিলেন, ফিরআউনের স্ত্রী। তাঁর স্ত্রী যখন মূসাকে দেখেন, তিনি তাঁকে ভালবেসে ফেলেন এবং নিজের কাছে রাখতে চান ফিরআউনের হয়তো কিছু ধারনা ছিল যে এটা বনী ইসরাইলের শিশু হতে পারে কিন্তু তাঁর স্ত্রী আসিয়ার জিদের জন্য সে রাজি হয়। এতে দেখা যায়, আল্লাহ্ যদি তাঁর বান্দাকে বাচাতে চান তাহলে আল্লাহ্ তাঁকে বাচানোর জন্য কাউকে পাঠাবেন। বনী ইসরাইলের সব শিশুর মধ্যে শুধু মূসা আলায়হিওসাল্লাম শুধু জীবিত ছিলেন। আশ্চর্যজনক ব্যাপার হল, মূসা আলায়হি ওয়াসালাম শুধু জীবিত ছিলেন না তিনি বেড়ে উঠেছিলেন ফিরআউনের প্রাসাদে। ফল কি হয়েছিল? ফিরে যাই প্রথম শিক্ষায়, আল্লাহ্ ওয়াদার উপর ইয়াকিন রাখা। আসিয়া যখন মূসাকে দুধ খাবানর চেষ্টা করলেন, মূসা খেলেন না। সুতরাং, ফিরাউনের স্ত্রী এদিক অদিক থেকে সব ধাত্রীদের আনলেন কিন্তু একই ব্যাপার হোল।

অবস্থায় মূসা আলায়হিওসসালামের বোন ফিরাউনের প্রাসাদে এসে বলল, আমি কি এমন একজনের কথা বলব যে এই শিশুকে দেখাশনা করতে পারবে? ফিরাউনের স্ত্রী রাজি হল কারণ শিশুটি একদমই খাচ্ছছেনা এবং মূসার বোন তাঁর মাকে ডেকে আনল। কেউ জানেনা এটা মূসার মা কিন্তু যখনই তিনি তাঁকে নিলেন সঙ্গে সঙ্গে মূসা দুধপান করতে লাগলেন। অতএব, মূসার মাকে প্রাসাদে কাজ করার কথা বলা হল। কিন্তু, যেহেতু এই সময় তাঁর অবস্থান সুবিধাজনক তিনি বললেন যে,  পরিবার দেখার দায়িত্বর জন্য প্রাসাদে আসা তাঁর পক্ষে সম্ভব না যদি মূসার দায়িত্ব তাঁকে নিতে হয় তাহলে মূসাকে পাঠাতে হবে।
 এখন, ব্যাপারটা এই হল যে মূসা আলাহহিওসাল্লামকে তাঁর মার বাড়ীতে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে এবং তাঁকে তাঁর লুকাতে হচ্ছেনা তাঁকে রাজার সৈন্যরা নিরাপত্তা দিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এটা হোল আল্লাহ্ ওয়াদার উপর ইমান রাখার পুরস্কার। আল্লাহ্ উপর ইয়াকিন থাকলে আল্লাহ্ এমন জায়গা থেকে দরজা খুলে  দিবেন যেখানে থেকে কখন সে সাহায্য আশা করেনি। 


read more
Blogger Template by Clairvo